একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে ঠিক কত টাকা খরচ হবে এই বিষয়টি নির্ভর করবে সেই সাইটের ক্যাটাগরির ওপর। যেমন- একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও একটি ব্লগ সাইটের খরচ কখনও এক হবে না। ই-কমার্স ওয়েবসাইটের খরচ স্বভাবতই অনেক বেশি হবে। কেননা এক্ষেত্রে একটি সাইট ডেভেলপ করতে অনেক ভালো মানের ডেভেলপার এবং দামী হোস্টিং এর প্রয়োজন হয়।
অন্যথায় কোনো সাধারণ বা পার্সোনাল ব্লগ বা ওয়েবসাইট অথবা নিউজসাইট তৈরি করতে চাইলে তা অনেক কম খরচে তৈরি করা যায়। কেননা এখানে একটু শ্রম ও মেধা খাটালে নিজে নিজেই একটি ওয়েবসাইট ওপেন করা যায়।
তো ওয়েবসাইট তৈরির খরচটা মূলত সম্পূর্ণ আপেক্ষিক। তবুও যারা এ ব্যাপারে একটি ক্লিয়ার ধারণা পেতে চান তাদের জন্য আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমি আলোচনা করার চেষ্টা করব একটি ওয়েবসাইট তৈরিতে সাধারণত কত টাকা খরচ হতে পারে।
ডোমেইন খরচ
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে গেলে সর্বপ্রথম একটি ডোমেইন ও তার সঙ্গে একটি প্রাইভেসি প্রোটেকশন ক্রয় করতে হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৮০০-১০০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের ডোমেইন পাওয়া যায়। তবে এসব ডোমেইন প্রতিবছর রিনিউ করে নিতে হয়। আবার একটি ডোমেইনের প্রাইভেসি প্রোটেকশন নিতে চাইলে তা আলাদাভাবে কিনতে হয়।
বর্তমানে অসংখ্য ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানি যেমন- Bluehost, HostGator, Namecheap ইত্যাদি রয়েছে, যারা খুব ভালো মানের ডোমেইন হোস্টিং সার্ভিস প্রদান করে থাকে। পছন্দমত যেকোন কোম্পানি থেকেই ডোমেইন ক্রয় করা যায়। তবে Namecheap থেকে ডোমেইন ক্রয় করলে ফ্রি ডোমেইন প্রাইভেসি সহ একটি পূর্ণাঙ্গ ডোমেইন ৮০০ টাকার মধ্যে ক্রয় করা সম্ভব।
হোস্টিং খরচ
হোস্টিং বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। তাই হোস্টিং এর সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে এর দামও অনেক ভিন্ন ভিন্ন। তবে শুরুর দিকে অনেক কম খরচে শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করা যায়। কেননা সে সময় সাইটে ভিজিটর অনেক কম থাকে। ফলে মোটামুটি মানের স্পিড হলেই চলে। সেক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইট যদি বাংলায় হয় তবে মাত্র ৮০০-১৫০০ টাকা ব্যয়ে এক বছরের জন্য ১-৫ গিগাবাইট স্টোরেজ সম্পন্ন হোস্টিং পেয়ে যাবেন।
তবে ওয়েবসাইট যদি ইংরেজিতে হয় তবে আমেরিকান কোনো হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং ক্রয় করাটা বেশি শ্রেয়। যেমন- Namecheap. এখান থেকে এক বছরের জন্য ২০ গিগাবাইট স্টোরেজ সমৃদ্ধ হোস্টিং ক্রয় করা যায় মাত্র ১৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন সাইটে ভালো মানের ভিজিটর আসা শুরু করবে তখন শেয়ার্ড হোস্টিং এর বদলে ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করা উচিত। নতুবা ওয়েবসাইট স্লো হয়ে যাবে এবং অনেকসময় বন্ধও হয়ে যেতে পারে। ক্লাউড হোস্টিং ক্রয় করার জন্য Cloudways খুবই স্বনামধন্য একটি সার্ভার। এখান থেকে ক্লাউড হোস্টিং সেবা নিতে হলে প্রতি মাসে অন্ততপক্ষে 10$ খরচ হতে পারে।
থিম খরচ
একটি ভালো মানের থিম আপনার ওয়েবসাইটের সৌন্দর্য এবং ভ্যালু বাড়িয়ে দিবে বহুগুণে। তবে থিম ক্রয় করতে খরচ সাধারণত একটু বেশি হওয়ায় অনেকেই প্রথমদিকে ফ্রি থিম ব্যবহার করে থাকেন। যদিও সেগুলোতে আপডেটেড ফিচারগুলো উপভোগ করা সম্ভব হয়না, তবুও এগুলো ব্যবহার করে গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য আবেদন করা যায় ও আর্নিং করা যায়।
তবে ওয়েবসাইট যখন কিছুটা পরিচিতি লাভ করবে তখন সেক্ষেত্রে প্রিমিয়াম থিম ব্যবহার করাই উত্তম। প্রিমিয়াম থিমগুলো সাধারণত ৩০ ডলার থেকে ৫০ ডলার পর্যন্ত মূল্যের হয়ে থাকে। অর্থাৎ ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যেই একটি থিম ক্রয় করা যায়। কিন্তু কারো যদি অনেক বেশি আর্থিক সমস্যা হয়ে থাকে তবে ফ্রি থিম ব্যবহার করলেও চলবে। তবুও কোন নাল থিম ব্যবহার করবেন না।