প্রযুক্তি দুনিয়ায় কম্পিউটার একটি অভাবনীয় আবিষ্কার। আঠারো শতকে যখন প্রথম কম্পিউটার ধারণার প্রবর্তন হয় তখন গণনা পদ্ধতির এক আমূল পরিবর্তন আসে। তবে বর্তমানে আমরা কম্পিউটার বলতে যা বুঝি তা পুড়নো আমলের থেকে একেবারে আলাদা। বর্তমান সময়ে আধুনিক কম্পিউটার ব্যবহার করে রোবটিক্স থেকে শুরু করে, শিক্ষা, চিকিৎসা, খেলাধুলা, অর্থনীতি, মহাকাশ ইত্যাদি বিষয়ের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের আজকের লেখায় আধুনিক কম্পিউটার কি এবং এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করবো।
আধুনিক কম্পিউটার কি?
আধুনিক কম্পিউটার বা মডার্ন কম্পিউটার হচ্ছে বর্তমান সময়ে বহুল প্রচলিত কম্পিউটার সিস্টেম। ১৮ শতকে চালু হওয়া এই অবাক করা যন্ত্র সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকারের আপডেট ও নতুন নতুন হার্ডওয়্যারের সমন্বয়ে নতুন রূপ ধারণ করেছে। মূলত নতুন ধরনের প্রযুক্তি যেমন ন্যানো টেকনোলজি কম্পিউটারের প্রসেসর সহ অন্যান্য হার্ডওয়্যারকে অনেক শক্তিশালী করে তুলেছে। এই কারণে ১৯ শতকে প্রচলিত হওয়া কম্পিউটার থেকে বর্তমান সময়ে তৈরি হওয়া কম্পিউটার অনেক উন্নত এবং অনেক জটিল কাজের সমাধান দিতে পারে।
মোটকথা, ২০০০ সালের পর কম্পিউটার তৈরির জগতে অভাবনীয় উন্নয়ন শুরু হয়। যা ২০১৮ সালের পর থেকে আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। শুরুর দিকে যেখানে হার্ডওয়্যার গুলো অনেক বড় এবং বহন করা অসম্ভব ছিল। সময়ের সাথে সাথে মাইক্রোকন্ডাক্টর ও ন্যানো টেকনোলজি চালু হওয়ার কারণে হার্ডওয়্যার তৈরি করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। পাশাপাশি পার্টস গুলো অনেক ছোট হয়ে গেছে যে কারণে অনেক ছোট জায়গায় একটি পূর্ণাঙ্গ কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ স্থাপন করা যায়।
বর্তমান সময়ে প্রচলিত ল্যাপটপ, গেমিং কম্পিউটার, সুপার কম্পিউটার, ট্যাব ইত্যাদি আধুনিক কম্পিউটারের সব থেকে বড় উদাহরণ। তাছাড়া কোয়ান্টাম কম্পিউটার পুরো প্রযুক্তির ধারণাই পালটে ফেলেছে। আমাদের আজকের আলোচনায় আমরা আধুনিক কম্পিউটার কি এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো।
আধুনিক কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
নিচে আধুনিক কম্পিউটার এর বৈশিষ্ট্য গুল বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
দ্রুতগতির
আধুনিক কম্পিউটারের সব থেকে বড় গুন হচ্ছে এটি অনেক দ্রুতগতির। বর্তমান সময়ে যে সকল হার্ডওয়্যার দিয়ে কম্পিউটার বানানো হয় সেগুলো দ্রুততার সাথে কাজ করে। মূলত এরা ইলেক্ট্রনিক সিগন্যাল সঠিক ভাবে ইউটিলাইজ করতে পারে। যে কারণে সংযোগে কোন প্রকারের বাঁধা থাকে না অর্থাৎ ডাটা প্রসেসিং থেকে শুরু করে আদান প্রদান অনেক দ্রুত হয়।
উদাহরণ হিসেবে হার্ডডিস্ক এর বিকল্প এসএসডি কে ধরেন। একটি হার্ডডিস্ক ডিভাইস যে গতিতে ডাটা প্রেরণ ও গ্রহণ করে এসএসডি তার থেকে অনেক বেশি গতিতে ডাটা প্রেরণ করতে পারদর্শী। অন্যদিকে প্রসেসর গুলো বেশি কোর আর থ্রেড সম্পন্ন হওয়ার কারণে অনেক তাড়াতাড়ি ডাটা প্রসেসিং সম্পন্ন করতে পারে। এই কারণে আধুনিক কম্পিউটার অনেক দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে।
কর্মদক্ষতা অনেক বেশি
একটি কম্পিউটারের পরিচিতি হয় তার কর্মদক্ষতার উপর নির্ভর করে। আধুনিক কম্পিউটার তৈরি করা হয় অনেক উন্নত এবং সাম্প্রতিক সময়ের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার দিয়ে। এতে ডাটা প্রসেসিং বৃদ্ধি পায় যা একাধারে কাজের গতি বৃদ্ধি করে এবং একই সাথে অনেক কাজ করার সুবিধা দেয়। উদাহরণস্বরূপ আপনার একটি ডুয়াল কোর কম্পিউটার থেকে একটি আই ৫ কম্পিউটার বেশি কাজ করবে।
অন্যদিকে শুরুর দিকে কম্পিউটার দিয়ে শুধু হিসেব করার কাজে এবং ছোট কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এখন প্রায় সব কাজ করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। যেমন যে সকল জায়গায় অটোমেশন করা হয় সে সকল স্থানে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার হয়। এমন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা উৎপাদন স্থান নেই যেখানে কম্পিউটার ব্যবহার করে কাজ করা হয় না। তাহলে বুঝতে পারছেন কম্পিউটারের কি পরিমাণ কর্মক্ষমতা থাকলে তার দ্বারা এসকল সকল কাজ সহজেই মানুষের পরিবর্তে করিয়ে নেওয়া যাচ্ছে।
জটিল কাজে বেশি পারদর্শী
মানুষ যখন প্রথম চাঁদে যায় তখন কম্পিউটার ব্যবহার করে স্পেস রকেট মেইন্টেইন করে পাঠানো হয়। তারপর ধীরে ধীরে প্রযুক্তি আরও উন্নতি করে এবং আমরা মঙ্গল গ্রহে পর্যন্ত রকেট পাঠাতে পারছি। পৃথিবীতে যত ধরনের কঠিন বিষয় আছে তাদের মধ্যে রকেট সাইন্স অন্যতম জটিল বিষয়। আধুনিক কম্পিউটার ব্যবহার করে এই সেক্টরের অনেক সমস্যা সমাধান করা হয়। তাছাড়া জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধানে এবং বিগ ডাটা ম্যানেজ করার জন্য এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
বহনযোগ্যতা
কম্পিউটার বহনযোগ্যতা এর ব্যবহারকে আরও বৃদ্ধি করেছে। আপনি আপনার ব্যাগে অনেক হাই কনফিগারেশনের একটি ল্যাপটপ নিয়ে ঘুরতে পারবেন। যা দিয়ে প্রায় সকল ধরনের কাজ করা যায়। বলা যায় যে আপনি ব্যাগে করে আপনার অফিস নিয়ে ঘুরছেন। আধুনিক কম্পিউটারের এটি একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
আধুনিক কম্পিউটারের প্রধান অংশ কয়টি ও কি কি?
নিচে আধুনিক কম্পিউটারের কয়টি অংশ থাকে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
সিপিইউ
সিপিইউ অর্থ সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। এটিকে মূলত কম্পিউটারের ব্রেইন বলা হয়। কম্পিউটার কোন কমান্ড কীভাবে বুঝবে এবং কীভাবে কাজ সম্পন্ন করবে তা নির্ভর করে প্রসেসর এর উপরে। আগের কম্পিউটার ও আধুনিক কম্পিউটারের মধ্যে অন্যতম পার্থক্য হলো এই প্রসেসিং পাওয়ার। আগে যে কাজ করতে কম্পিউটারের দুই দিন লাগতো তা আজ এক ঘণ্টার মধ্যেও করা সম্ভব।
মেমোরি
স্টোরেজ বা মেমোরি হচ্ছে ডাটা সেভ করে রাখার হার্ডওয়্যার। আপনার হাতে যে মোবাইল আছে তাতে আপনি যে ছবি তোলেন বা ভিডিও করেন তা মেমোরিতে জমা হয়। তেমনি কম্পিউটার পরিচালনার জন্য আমাদের স্টোরেজের প্রয়োজন হয়। আধুনিক কম্পিউটারে বর্তমানে গতানুগতিক হার্ডডিস্ক এর বদলে এসএসডি (সলিড-স্টেট ড্রাইভ) ব্যবহার করা হয়। এই ড্রাইভের বিশেষত্ব হচ্ছে এটি হার্ডডিস্ক থেকে অনেক দ্রুত ডাটা আদান-প্রদান করতে পারে।
সাধারণত একটি SSD প্রতি সেকেন্ডে ৬০০ এমবি থেকে ৪ জিবি পর্যন্ত ডাটা লেনদেন করতে সক্ষম। বর্তমান সময়ে সবাই তাদের পার্সোনাল কম্পিউটার থেকে গেমিং কম্পিউটারে সব জায়গায় এসএসডি ব্যবহার করছে।
মাদারবোর্ড
এর নামের মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে এর কাজ কি হতে পারে। এই হার্ডওয়্যারের কাজ হচ্ছে কম্পিউটারের অন্যান্য হার্ডওয়্যারকে আদর যত্ন করে সামলিয়ে রাখা এবং সঠিকভাবে পরিচালনা করা। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির অনেক নামী দামী মাদারবোর্ড পাওয়া যায়। তাদের প্রধান কাজ একই হলেও আধুনিক কম্পিউটারের জন্য তৈরি করা মাদারবোর্ডগুলোয় অনেক বেশি প্রয়োজনীয় ফিচার থাকে।
র্যাম
র্যাম কে বলা হয় র্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমোরি যেখানে কম্পিউটার কর্মক্ষম থাকার প্রয়োজনীয় ফাইল থাকে। অর্থাৎ এর কাজ হচ্ছে কম্পিউটারকে সবসময় তার প্রয়োজনীয় ফাইল অ্যাক্সেস করার সুবিধা প্রদান করা। একটি কম্পিউটারে যত বেশি র্যাম হবে তার কাজের গতি তত বেশি হবে।
পাওয়ার সাপ্লাই
পাওয়ার সাপ্লাই এর প্রধান কাজ হচ্ছে কম্পিউটারে থাকা প্রতিটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে বিদ্যুৎ সাপ্লাই করা। আধুনিক যুগে এই সকল পাওয়ার সাপ্লাইয়ের মধ্যে অনেক বেশি সিকিউরিটি ফিচার থাকে যা আমাদের কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারে সর্ট-সার্কিট হওয়া থেকে রক্ষা করে।
জিপিইউ
আমরা কম্পিউটার ওপেন করার সাথে সাথে মনিটরে যে সুন্দর ইন্টারফেস দেখতে পাই তা আসলে গ্রাফিক্স এর কাজ। প্রতিটি প্রসেসরে সাধারণ ইউজ করার জন্য গ্রাফিক্স সুবিধা দেওয়া থাকে। তবে আধুনিক কম্পিউটার দিয়ে গেম খেলা সহ, ভিডিও এডিটিং, মোশন গ্রাফিক্স, ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজ করা হয়। এর জন্য প্রয়োজন পরে ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ডের। জিপিইউ হচ্ছে কম্পিউটারে আলাদাভাবে গ্রাফিক্স সাপোর্ট দেওয়ার জন্য গ্রাফিক্স প্রোসেসিং ইউনিট।
ড্রাইভার
ড্রাইভার হচ্ছে কম্পিউটারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস কে প্রসেসরের সাথে সংযুক্ত করার সফটওয়্যার। এটি প্রতিটি ফিচারের জন্য আলাদা আলাদা হলেও কাজ মূলত একই। যখন আমরা কোন নতুন ডিভাইস কম্পিউটারে সংযুক্ত করি তা কম্পিউটার সিস্টেম চিনতে পারে না। ড্রাইভার সফটওয়্যার কম্পিউটারকে সংযুক্ত ডিভাইসের সিগনেচার পরিচিত করায়।
কুলিং সিস্টেম
সবসময় ইলেকট্রনিক সিগন্যাল নিয়ে কাজ করার কারণে কম্পিউটারের প্রসেসর সহ অন্যান্য হার্ডওয়্যার অনেক গরম হয়। যা এর পারফর্মেন্স কমিয়ে দেয় এবং পুরো মাদারবোর্ড পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও এখন পর্যন্ত গতানুগতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে এই সকল হার্ডওয়্যার ঠান্ডা রাখা হতো কিন্তু লিকুইড কুলার সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে। অর্থাৎ কুলিং সিস্টেম একটি কম্পিউটারকে অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকে রক্ষা করে।
ইনপুট আউটপুট ডিভাইস
কম্পিউটার নিজে থেকে কোনো কাজ করতে পারে না। এতে ইনপুট ডিভাইস যেমন মাউস, কিবোর্ড ইত্যাদি দিয়ে কমান্ড দেওয়া হয় এবং তা আউটপুট ডিভাইস যেমন মনিটরে প্রদর্শিত হয়। কম্পিউটারের জন্য এরকম অনেক ধরনের ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইস রয়েছে।
অপারেটিং সিস্টেম
সর্বশেষে কম্পিউটারের সকল হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয় করে হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেম। বর্তমানে প্রচলিত অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স ও অ্যান্ড্রয়েড অন্যতম। মূলত একটি কম্পিউটার ব্যবহার করার জন্য অপারেটিং সিস্টেম লাগবেই।
আধুনিক কম্পিউটার কত প্রকার?
আধুনিক কম্পিউটার সাধারণত পাঁচ প্রকারের হয়ে থাকে। নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
মিনি কম্পিউটার
মিনি কম্পিউটার এর ধারণার সাথে বিশ্ববাসী প্রথম পরিচিত হয় ১৯৬০ সালের দিকে। ৭০ এর দশকে এটি আরও বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। মূলত মেইনফ্রেম কম্পিউটার থেকে আকারে ছোট ও মাইক্রো কম্পিউটারের থেকে আকারে বড় কম্পিউটার কে মিনি কম্পিউটার বলে। মিনি কম্পিউটারের সব থেকে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি সহজে বহনযোগ্য। এর সাথে কানেক্ট করে আপনি একইসাথে একাধিক মনিটর ব্যবহার করতে পারবেন।
পরবর্তীতে ৮০র দশকে মাইক্রো কম্পিউটার চালু হওয়ার পর ধীরে ধীরে মিনি কম্পিউটারের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। তবে এখন পর্যন্ত ব্যাবসায়িক হিসাব-রক্ষণ, শিক্ষা, গবেষণা ও শিল্প নিয়ন্ত্রণ করার কাজে এই কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে আসছে।
মাইক্রো কম্পিউটার
মেইনফ্রেম ও মিনি কম্পিউটার থেকে তথা এখন পর্যন্ত প্রচলিত সকল কম্পিউটার থেকে ছোট কম্পিউটারকে মাইক্রো কম্পিউটার বলে। ৮০র দশকে জনপ্রিয়তা পাওয়া এই কম্পিউটার একটি মাইক্রোপ্রসেসর সিপিইউ দ্বারা পরিচালিত হয়। বর্তমানে অফিস, আদালত, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, ব্যাবসা-বাণিজ্য, খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে মাইক্রোকম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে।
পার্সোনাল কম্পিউটার
ব্যক্তিগত কম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার আমাদের সবার কাছেই পরিচিত। কারণ আমরা কম্পিউটার বলতে সাধারণত এই পার্সোনাল পিসি কে বুঝি। আকার আকৃতি ও দামের দিক দিয়ে এটি সহজে বহনযোগ্য এবং সহজেই পরিচালনাযোগ্য। এই কারণে গোটা বিশ্বে পার্সোনাল কম্পিউটারের এত চাহিদা তৈরি হয়েছে। পার্সোনাল কম্পিউটারের মধ্যে ল্যাপটপকে স্থান দেওয়া হয় যা পিসি এক্সপেরিয়েন্স আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছে।
সুপার কম্পিউটার
প্রচলিত সকল কম্পিউটারের থেকে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার সিস্টেমকে সুপার কম্পিউটার বলে। আমরা জানি সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহার করে আমরা খুব দ্রুত গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে পারি। অন্যদিকে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে আরও দ্রুত এবং একই সাথে অনেকগুলো কাজ করা যায়। সহজ ভাষায় একটি সাধারণ কম্পিউটারের একটি হিসেব করতে যদি ১ দিন লাগে তাহলে একটি সুপার কম্পিউটার তা কয়েক মিনিটের থেকেও দ্রুত করতে পারে। এই জন্য বিভিন্ন ধরনের বড় বড় রিসার্চ, এনক্রিপশন-ডিক্রিপশন, রোগ নির্ণয়, আবহাওয়ার পূর্বাভাস ইত্যাদি কাজে এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার
কম্পিউটারের জগতে একটি বিস্ময়ের নাম হচ্ছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। সাধারণত কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর উপর ভিত্তি করে এটি তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ কম্পিউটার যেখানে প্রসেসিং ইউনিট হিসেবে bit ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার সেখানে qubit ইউনিট ব্যবহার করে। এই কারণে সাধারণ কম্পিউটার শুধু 0 এবং 1 বাইনারি হিসেব বুঝলেও কোয়ান্টাম কম্পিউটার 0 এবং 1 এর হিসেব আলাদা ভাবে অথবা একই সাথে বুঝতে পারে। যে কারণে এটি সকল ধরনের কম্পিউটার সিস্টেম থেকে শক্তিশালী।
কম্পিউটার স্লো হওয়ার কারন কি?
উপরিউক্ত আলোচনায় একটি আধুনিক কম্পিউটার কি এবং বর্তমান প্রযুক্তিতে এর প্রভাব কতটুকু সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি লেখাটি পরে আপনার আধুনিক কম্পিউটার সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার হয়ে গেছে।